১৯৮৭ সালের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহজুড়ে, বলা যায় ১০ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা শহর ছিল উত্তাল। তখনকার রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ ঢাকাকে পুরো বাংলাদেশ থেকে কার্যত বিচ্ছন্ন করে ফেলেছিলেন। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং শিক্ষার্থীদেরকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নিষিদ্ধ করা হয়েছিল রাজনৈতিক সমাবেশ, প্রতিবাদ সভা, মিছিল সবকিছু। স্বৈরশাসক এরশাদ গণতন্ত্রপন্থী নেতাকর্মীদের আটক করার জন্য জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করেছিলেন।
কিন্তু এর মধ্যেই বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীরা এরশাদের পদত্যাগের দাবিতে হাজার হাজার সমর্থককে জড়ো করেছিল। ১০ নভেম্বর সকালের কথা মনে আছে আমার। ওই দিন হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর সঙ্গে আমিও যোগ দিয়েছিলাম। সকাল ৯টার দিকে দাঙ্গাপুলিশ বেশ কয়েকজন প্রতিবাদকারীর সঙ্গে আমাকেও ধরে নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর একটা লরিতে বন্দি করে আমাদেরকে নির্দয়ভাবে পিটিয়েছিল তারা।
সেদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক রাজনৈতিক বন্দীদের আনা হয়েছিল। সমস্ত ঢাকা শহরজুড়ে চলছিল বিক্ষোভ, লড়াই। গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন কয়েকজন বিক্ষোভকারী। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন, যার খালি গায়ে বুকে ও পিঠে আঁকা ছিল স্লোগান। বাদামী রঙের শরীর, তার উপর উজ্জ্বল সাদা রঙে লেখা স্লোগানের সেই শব্দগুলো 'স্বৈরাচার নিপাত যাক' আমাদের মধ্যে যেন বিদ্যুৎ সঞ্চার করেছিল।
লাশটি ছিল নূর হোসেন নামের এক ব্যক্তির। আমরা অবশ্য তখনও তাঁর নাম জানতাম না। আমরা এটাও জানতাম না, যে জায়গায় তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, একদিন সেই জায়গার নামকরণ হবে তাঁর নামে। আমরা জানতাম না, একদিন তিনি বিখ্যাত হয়ে উঠবেন। তাঁর আত্মত্যাগ একদিন বই, চলচ্চিত্র, কবিতা, ডাকটিকিটে অমর হয়ে রইবে। আমরা জানতাম না, তাঁর মৃত্যুর কয়েক মুহূর্ত আগে তোলা একটি ছবি আমাদের প্রজন্মের কাছে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই-সংগ্রামের প্রতীক হয়ে উঠবে।
নূর হোসেনের ভাইয়ের খোঁজে
গত তেত্রিশ বছরে নূর হোসেনের এই ছবি আমি অনেকবার দেখেছি। ছবিতে তাঁকে খুব দৃঢ়প্রতিজ্ঞ দেখাচ্ছে। তাঁর তারুণ্যদীপ্ত শরীরে আঁকা স্লোগান থেকে যেন সূর্যের আলো ঠিকরে বের হচ্ছে।
নূর হোসেনের মৃত্যুর পরের দিন বংলাদেশের সমস্ত পত্রিকার প্রথম পাতায় তাঁর ছবি ছাপা হয়েছিল। ছাব্বিশ বছর বয়সী নূরের ছবি সরকারকে করেছিল হতবাক আর লক্ষ লক্ষ মানুষকে করেছিল অনুপ্রাণিত। নূর হোসেন এবং আমি ১৯৮৭ সালের যে প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়েছিলাম, সেই প্রতিবাদ অত্যন্ত নির্মমভাবে দমন করা হয়েছিল। কিন্তু এর ঠিক তিন বছর পর আরেকটি প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয়েছিল এবং ওই আন্দোলনে রাষ্ট্রপতি এরশাদ ক্ষমতাচ্যুত হোন। সেই আন্দোলনে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা প্রত্যেকেই নূর হোসেনের ছবি দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিলেন।
![]() |
নূর হোসেনের ভাই আলী |
আমি মাঝে মাঝেই ভাবি, কী সেই শক্তি যা ঢাকার একটি খেটে খাওয়া পরিবারের ছেলেকে এমন আত্মোৎসর্গ করতে অনুপ্রাণিত করেছিল? গণ অভ্যুত্থানের ৩০তম বার্ষিকীর প্রাক্কালে আমি এই প্রশ্নের উত্তর খূঁজতে বের হয়েছি।
নূর হোসেনের বাবা মজিবুর রহমান ছিলেন পুরান ঢাকার অটোরিকশা চালক। পনের বছর আগে নূরের বাবা মারা গেছেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আমি নূরের ভাই আলীর সন্ধান পাই। তিনি এখনও নূরের শেষ জীবনের স্মৃতিগুলো হুবহু স্মরণ করতে পারেন। 'আমার বাবা জানতেন নূর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সে প্রায়ই বাড়ি থেকে দূরে থাকত আর বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাবেশে অংশ নিত।' বলছিলেন নূরের ভাই আলী।
সেবার টানা দুইরাত বাড়িতে ফেরেননি নূর। মা বাবা চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। এখানে সেখানে খোঁজাখুঁজি শুরু হলো। পরে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সকালে তাকে ঢাকা শহরের একটি মসজিদের নিচে পাওয়া গেল। আলী বলছিলেন, 'আমার মা বাবা তাকে বাড়ি ফেরার জন্য হাতেপায়ে ধরেছিল। কিন্তু সে বাড়ি ফেরেনি। ওটাই ছিল মা বাবার সঙ্গে তার শেষ দেখা।'
ওই দিন নূর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দেন। ঢাকা শহর উত্তাল হয়ে পড়ে। এক সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সহিংসতা শুরু হয়। ইট, পাটকেল ছোড়াছুড়ি। অতঃপর পুলিশের গুলিবর্ষণ। গুলিতে নূর হোসেনসহ তিনজন নিহত হোন। আহত হোন আরও কয়েকজন।
নূরের বাড়িতে খবর যায় যে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। খবর শোনা মাত্র নূরের বাবা মজিবুর ও ভাই আলী ছুটে বেরিয়ে যান। যেখানে নূর হোসেনরা প্রতিবাদ মিছিল করেছিলেন সেখান যান, পাননা। তারপর পুলিশ হাসপাতালে খোঁজেন। শেষে জানতে পারেন নূরের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে একটা স্টেশনে। সেখানে গেলে তাদেরকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয় না। তবে তারা নিশ্চিত করেন যে ভিতরে একটি লাশ রয়েছে যার শরীরে রঙ দিয়ে কিছু লেখা রয়েছে। তারা বলেন, এখন যদি লাশ দেই তাহলে শহরে দাঙ্গা লেগে যাবে।
নূর হোসেনকে হত্যার জন্য কোনও পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। পুলিশের গুলিতে নিহত হলেও জেনারেল এরশাদের সময়ে কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনা হয়নি।
আমি আলীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনি কী মনে করতে পারেন, কে আপনার ভাইয়ের শরীরে এমন মারাত্মক স্লোগান এঁকে দিয়েছিলেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, মনে আছে। লোকটির নাম ইকরাম হোসেন। বলা প্রয়োজন, ইকরাম তখন থাকতেন রাষ্ট্রপতি এরশাদের স্টাফ কোয়ার্টারে এবং তার ছোট ভাই ছিলেন রাষ্ট্রপতির বার্তাবাহক। আলী আমাকে ইকরামের ফোন নম্বর দিলেন।
চিত্রশিল্পীর খোঁজে
আমি ইকরামকে ফোন করলাম—আপনি কী ইকরাম বলছেন?
'হ্যাঁ, আমিই ইকরাম।'
তারপর গল্প শুরু হলো। ১৯৮৭ সালে ইকরামের বয়স ছিল ১৮। তিনি সাইনবোর্ড লেখার কাজ করতেন। তিনি বঙ্গভবন এলাকায় বড় ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন আর মতিঝিলে ছোট্ট একটা দোকান চালাতেন। দোকানটা ছিল মূলত সাইনবোর্ড, ব্যানার এসব লেখা ও আঁকার।
'আমি নূর হোসেনকে চিনতাম।' ইকরাম বললেন। 'সে একটি ফার্নিচারের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করত। খুব একটা কথা টথা বলত না।'
![]() |
চিত্রশিল্পী ইকরাম হোসেন |
৯ নভেম্বরের কথা। দিনের কাজ শেষ। ইকরাম ভাবছেন বিকেল পাঁচটার মধ্যেই দোকানের শাটার বন্ধ করে ফেলবেন। কিন্তু দোকার বন্ধের আগে নূর হোসেন তাকে একটা অনুরোধ জানান। 'তিনি আমাকে পাশের একটা চিপা গলিতে নিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর শরীর থেকে শার্ট খুলে বলেছিলেন স্লোগান লিখে দিতে। আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বললাম, আমি এ কাজ করতে পারব না। আমার ভাই রাষ্ট্রপতির বার্তাবাহক। আমরা সমস্যায় পড়ে যাব। তুমি অ্যারেস্ট হবে। তোমাকে খুন করে ফেলবে।
কিন্তু নূর ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি ইকরামকে বললেন, ভয় পাবেন না। কাল দেখবেন কমপক্ষে শ খানেক মানুষের শরীরে এই স্লোগান লেখা।
ইকরামের তখন মন নরম হয়। তিনি নূরের শরীরে স্লোগান এঁকে দেন। বুকে লিখে দেন 'স্বৈরাচার নিপাত যাক'। আর পিঠে লিখে দেন 'গণতন্ত্র মুক্তি পাক'। তারপর দুটো দাঁড়ি দেন। 'দাঁড়ি দেই, কারণ আগামীকাল শত শত স্লোগানের ভিতর যেন আমার লেখা স্লোগানকে চিনতে পারি। কিন্তু পরদিন দেখি, একজন মানুষের শরীরেই কেবল স্লোগান আঁকা!'
আর সঙ্গতকারণে আলোকচিত্রীদেরও নজর কেড়েছিল নূরের শরীর। তারা নূরের ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।
আলোকচিত্রীর খোঁজে
পাভেল রহমান নামের একজন আলোকচিত্রী পেছন থেকে দেখতে পেয়েছিলেন নূর হোসেনকে। আমি পাভেলের সঙ্গে ঢাকায় একটি সংবাদপত্রে কাজ করতাম। পাভেল প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে ঢাকা শহরে ছবি তোলার কাজ করেন।
সাদা কালিতে লেখা নূর হোসেনের পিঠের স্লোগান দেখে পাভেলের বুকে ধাক্কা লেগেছিল। তিনি বলেন, 'নিজের শরীরে আঁকা এমন পোস্টার আমি আমার জীবনে দেখি নাই। তৎক্ষণাৎ আমি ছবি তুলে ফেললাম। ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে যাওয়ার আগে আমি মাত্র দুটো ক্লিক করার সুযোগ পেয়েছিলাম। একটা ছিল আড়াআড়ি ফ্রেমে আরেকটি ছিল লম্বালম্বি। দুটোই পেছন থেকে। আমার ধারনাও ছিল না যে বুকেও এমন স্লোগান লেখা থাকতে পারে।'
ওইদিন নিজের সংবাদপত্র অফিসের ডার্করুমে বসে যখন পাভেল ছবির ফিল্মগুলো বের করছিলেন তখন একজন সহকর্মী জানান, বুকে-পিঠে পোস্টার আঁকা লোকটি মারা গেছেন।
'ছবিটি এখন প্রকাশ করা উচিত হবে কিনা এ নিয়ে আমাদের মধ্যে খানিক বিতর্ক হলো। আমাদের সম্পাদক বললেন, ছবিটা প্রকাশ করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হবে। সরকারের দিক থেকে ব্যপক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা ছবিটি ছাপার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।'
পাভেল বললেন, রাষ্ট্রপতি এরশাদ ভয়ঙ্করভাবে রেগে গেলেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলো, ছবিটি নকল। আমরা এটি নিজেরাই বানিয়েছি। আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম। তারপর বেশ কয়েকদিন লুকিয়ে ছিলাম।
পাভেলের ছবি মুহূর্তেই সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ল। কিন্তু কেউই নূরের মুখ চিনত না যদি কেউ সামনে থেকে ছবিটা তুলতেন! সেই আলোকচিত্রীর নাম দিনু আলম, তিনি নূর হোসেনের সামনে থেকে ছবি তুলেছিলেন।
দিনু আলম বলেন, 'আমি নূর হোসেনর সামনে থেকে বেশ কয়েকটি ছবি তুলেছিলাম। বেশ কিছুক্ষণ তার কাছাকাছি ছিলামও। কিন্তু একবারও মনে হয়নি তার পিঠেও স্লোগান লেখা থাকতে পারে!'
নৈশ প্রহরীরর খোঁজে
পরদিন পত্রিকার প্রথম পাতায় যখন নূর হোসেনের ছবি দেখলেন তখন মানসিকভাবে খুব বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন ইকরাম হোসেন। তার তখন মনে হচ্ছিল তার বন্ধুর মৃত্যুর জন্য তিনিই দায়ী। 'আমার কেবলই মনে হচ্ছিল, যদি স্লোগানটা আমি না লিখে দিতাম, তাহলে হয়ত নূর বেঁচে থাকত।' তারপর কয়েক বছর পুলিশের ভয়ে তিনি অত্মগোপনে ছিলেন। তিন বছর পর যখন এরশাদের পতন হলো তখন তিনি একটু নিরাপদ বোধ করতে লাগলেন। আত্মগোপন থেকে বেরিয়ে এলেন এবং প্রথমেই গেলেন নূর হোসেনের কবরে। তারপর গেলেন নূর হোসেনের বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে। নূর হোসেনের বাবার হাত ধরে তিনি কেঁদে ফেললেন এবং বারবার নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইতে লাগলেন। নূরের বাবা বললেন, তুমিও আমার ছেলের মতো। আমি আমার এক ছেলেকে হারিয়েছি। এখন থেকে তুমিই আমার ছেলে। তোমার ও নূর হোসেনের কারণে আমরা গণতন্ত্র পেয়েছি।
আবার ৮৭ সালে ফিরে যাই। নূর হোসেনর মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর মজিবুর রহমান ও মরিয়ম বিবি জানতে পেরেছিলেন, তাদের ছেলের লাশের কী হয়েছিল। সেদিন নূরের লাশ পুলিশ খুব গোপনে একটি পুরনো কবরস্থানে নিয়ে গিয়েছিল এবং কবর দিয়েছিল। এই খবরটি নূরের পরিবারকে দিয়েছিল, তার কবর প্রস্তুতকারী মানুষগুলো।
নূর হোসেনকে যেখানে সমাধীস্থ করা হয়েছে সেই জুরাইন কবরস্থানের কেয়ারটেকারকে ফোন করলাম। কেয়ারটেকার তখন মোহাম্মদ আলমগীর নামের একজন নৈশপ্রহরীর ফোন নম্বর দিলেন। আলমগীর তখন জুরাইন কবরস্থানের নৈশপ্রহরী ছিলেন।
আলমগীর বললেন, 'রাত তখন আনুমানিক আড়াইটা। পুলিশ লাশগুলো নিয়ে এলো। কবর খোঁড়া নাইট গার্ডের কাজ নয়, তরপরও আমি কবর খুঁড়লাম, লাশকে গোসল করালাম এবং কবর দিলাম।'
বুকে-পিঠে স্লোগান লেখা লাশের ঠিক বুকের নিচেই একটা গুলির গর্ত ছিল। 'আমি শরীর থেকে রঙের লেখাগুলো মুছে দেবার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কিছুতেই লেখাগুলো উঠছিল না।'
এর অনেক বছর পর আরও একটি বিস্ময় অপেক্ষা করছিল মজিবুর ও মরিয়মের জীবনে। ১৯৯০ সালে এরশাদ জেলে গিয়েছিলেন আর জেলে থেকে বের হয়েছিলেন ১৯৯৭ সালে। জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পর তিনি মজিবুর ও মরিয়মের বাড়িতে গিয়েছিলেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন।
জেনারেলের খোঁজে
নূর হোসেনের মৃত্যুর অন্তত দশ বছর পর আমি জেনারেল এরশাদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। সেটা ছিল ১৯৯৯ সাল এবং এরশাদ ছিলেন বিরোধীদলীয় নেতা।
গত বছর মারা যাওয়া এই জেনারেলের স্বাচ্ছন্দ্যময়, মনোমুগ্ধকর ব্যক্তিত্ব ছিল। তবে তিনি একমুখে শত কথা বলতেন। ১৯৮২ সালে তিনি রক্তপাতহী নসামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন। এরপর সারা বিশ্বজুড়ে সামরিক শাসকরা এই স্ক্রিপ্টই অনুসরণ করেছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই
করবেন, সরকারকে সংস্কার করবেন এবং রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করবেন। তিনি ধর্মীয় রক্ষণশীলদের খুশি করার জন্য ইসলামকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম করেছিলেন।
ইকরাম হোসেন বলছিলেন, রাতের পূর্ণিমার মতো উজ্জ্বল যে গণতন্ত্র ছিনিয়ে এনেছিল নূর হোসেনরা সেই গণতন্ত্র এখন কোথায়?
সূত্র: বিবিসি
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: মারুফ ইসলাম
প্রকাশ: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, ১২ ডিসেম্বর ২০২০
0 Comments
Post a Comment